Thursday, September 26, 2024
Tuesday, May 7, 2024

ঢাকা সেনানিবাসে এএফআইপি ও সেনা প্রাঙ্গণ ভবন উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী

ঢাকা সেনানিবাসে নবনির্মিত আর্মড ফোর্সেস ইনস্টিটিউট অব প্যাথলজি (এএফআইপি) ভবন এবং সেনা প্রাঙ্গণ (আর্মি সেন্ট্রাল অডিটোরিয়াম) ভবনের উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
আজ রোববার প্রধানমন্ত্রী ঢাকা সেনানিবাসে স্থাপনা দুটির নামফলক উন্মোচন করেন।
এ সময় প্রধানমন্ত্রী ফিতা কেটে এএফআইপি ভবনে প্রবেশ করেন এবং নতুন ভবনটি পরিদর্শন করেন।
এএফআইপি কমান্ড্যান্ট মেজর জেনারেল নিশাত জোবাইদা নতুন ভবনের মূল বৈশিষ্ট্য ও সুযোগ-সুবিধা প্রধানমন্ত্রীর সামনে তুলে ধরেন।
২০২৪ সালের ডিসেম্বরে প্রকল্পটির কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল। নির্ধারিত সময়ের আগেই কাজ শেষ হওয়ায় উদ্বোধন করা হয়েছে।
এ সময় স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণমন্ত্রী সামন্ত লাল সেন, সেনাপ্রধান জেনারেল এস এম শফিউদ্দিন আহমেদ এবং নৌবাহিনীর প্রধান অ্যাডমিরাল এম নাজমুল হাসান উপস্থিত ছিলেন।
এরপর প্রধানমন্ত্রী সেনা প্রাঙ্গণ ভবন উদ্বোধন করতে যান এবং ফিতা কেটে নতুন ভবনে প্রবেশ করেন।
সেনাবাহিনীর কেন্দ্রীয় মিলনায়তন সেনা প্রাঙ্গণ গুরুত্বপূর্ণ সভা, সেমিনার ও সামাজিক অনুষ্ঠানের মতো জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ের বিভিন্ন অনুষ্ঠান আয়োজনের জন্য নির্মাণ করা হয়েছে।
এ সময় সেনাপ্রধান জেনারেল এস এম শফিউদ্দিন আহমেদসহ ঊর্ধ্বতন সেনা কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
Monday, August 23, 2021
পরীমনিকে হেনস্তার দায়িত্ব রাষ্ট্র নিজের হাতে তুলে নিয়েছে
রাজধানীর শাহবাগে এক সমাবেশে বক্তারা বলেছেন, চিত্রনায়িকা পরীমনিকে নানা কারণে, নানাভাবে হেনস্তা করা হচ্ছে। শেষ পর্যন্ত তাঁকে হেনস্তা করার দায়িত্বটা রাষ্ট্র নিজের হাতেই তুলে নিয়েছে।
বক্তারা বলেছেন, পরীমনিকে কেন বারবার এভাবে রিমান্ডে যেতে হবে, উচ্চ আদালত কেন পুলিশের বিরুদ্ধে একটা সুয়োমোটো জারি করবে না?
আজ রোববার বিকেলে রাজধানীর শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনে এক নাগরিক সমাবেশে নির্মাতা, শিল্পী, শিক্ষক ও মানবাধিকারকর্মীরা এসব কথা বলেন। শ্রাবণ প্রকাশনীর প্রকাশক রবিন আহসান ও অ্যাকটিভিস্ট আকরামুল হকের উদ্যোগে ‘বিক্ষুব্ধ নাগরিকজন’ ব্যানারে এই সমাবেশের আয়োজন করা হয়।
সমাবেশে বক্তব্য মাদকের মামলায় গ্রেপ্তার চিত্রনায়িকা পরীমনির জন্য ন্যায়বিচার ও অবলিম্বে পরীমনির জামিন দাবি করেন।
সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ও বিশিষ্ট মানবাধিকারকর্মী সুলতানা কামাল সমাবেশে ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হন। তিনি বলেন, ‘একটি স্বাধীন দেশে একজন মানুষের সুবিচারের জন্য আমাদের মানববন্ধন বা সমাবেশ করতে হচ্ছে, এর থেকে বিব্রতকর, লজ্জাজনক ও দুঃখজনক ঘটনা কোনো সমাজে বোধ হয় আর হতে পারে না। একটি মানুষ যিনি একসময় কোনো একটা অপরাধের শিকার হয়ে মামলা করেছিলেন, সেই মামলার পরিপ্রেক্ষিতে নানাভাবে তাঁর পরিচয় সামনে নিয়ে আসা হয়েছে, নানাভাবে হেনস্তা করা হয়েছে। শেষ পর্যন্ত তাঁকে হেনস্তা করার দায়িত্বটা রাষ্ট্র নিজের হাতেই তুলে নিয়েছে। কিন্তু একজনকে, বিশেষ করে অত্যন্ত অল্প বয়সী পেশাজীবী একজন নারীকে, যেভাবে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, তা সংগত হয়নি।’
সমাজের রন্ধ্রে রন্ধ্রে নারীবিদ্বেষ ঢুকে গেছে বলে মন্তব্য করেন সুলতানা কামাল। বিনোদনশিল্পের কোনো নারীর বিরুদ্ধে বলার সুযোগটা তারা হাতছাড়া করে না। সে কারণেই বিচার শুরু হওয়ার আগেই পরীমনিকে অভিযুক্তের মতো কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়ে প্রতিনিয়ত তাঁর বিরুদ্ধে বিষোদ্গার করা হচ্ছে, কুৎসা রটানো হচ্ছে, নিকৃষ্ট কথাবার্তা বলা হচ্ছে। এসবের সুযোগ করে দেওয়ার দায়দায়িত্ব রাষ্ট্রীয় বাহিনীকে নিতে হবে।
সুলতানা কামাল বলেন, ‘পরীমনির জামিনের আবেদনটি অত্যন্ত অন্যায়ভাবে শোনা হচ্ছে না। তাঁর আইনজীবীকে জামিনের আবেদন করতে দেওয়া হয়নি, আইনজীবীকে পরীমনির সঙ্গে কথা বলতে দেওয়া হয়নি। এটা মানবাধিকারের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। কোনো আদালত এটি করতে পারেন না। আমরা এর নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। রাষ্ট্রীয় বাহিনীকে তাদের আচরণ সংযত করতে হবে এবং পরীমনির বিরুদ্ধে বিচার পরিচালনা করতে হলে তা আইন অনুযায়ী করতে হবে। যা কিছু করবেন, আইন অনুযায়ী সংস্কৃতভাবে, সংযতভাবে, সাংবিধানিকভাবে ও সর্বোপরি মানুষের মর্যাদা ও অধিকার রক্ষা করে করতে হবে। অন্যথা হলে আমরা তীব্র প্রতিবাদ ও প্রতিরোধ গড়ে তুলতে বাধ্য হব।’
ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হয়ে একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি শাহরিয়ার কবির বলেন, অতি সম্প্রতি চলচ্চিত্র অভিনেত্রী পরীমনিকে নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও গণমাধ্যমে যেটি শুরু হয়েছে, কোনো সিদ্ধান্তের আগেই তাঁকে অপরাধী হিসেবে চিত্রিত করা হচ্ছে। পরীমনি অপরাধ করেছেন কি করেননি, সেই সিদ্ধান্ত নেবেন আদালত। আদালতের রায়ের আগে পরীমনিকে অপরাধী হিসেবে সাব্যস্ত করা এবং তাঁর বিরুদ্ধে নানা ধরনের অস্বস্তিকর ও অগ্রহণযোগ্য বক্তব্য দেওয়া—এসব কোনো সভ্য সমাজের পরিচয় হতে পারে না। তিনি বলেন, পরীমনিকে কেন বারবার এভাবে রিমান্ডে যেতে হবে, উচ্চ আদালত কেন পুলিশের বিরুদ্ধে একটা সুয়োমোটো জারি করবেন না? একবার রিমান্ড যথেষ্ট, এর জন্য তো এতবার রিমান্ডে নেওয়ার দরকার হয় না।
মানবাধিকারকর্মী খুশী কবির বলেন, ‘পরীমনিকে যেভাবে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, দেশের একজন নাগরিকের সঙ্গে এমন আচরণ করা যায় না। তাঁকে তিনবার রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে, জামিন দেওয়া হয়নি। এই ঘটনা দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিকে হুমকির মুখে ফেলেছে। অনতিবিলম্বে পরীমনির মুক্তি দাবি করছি।’ তিনি বলেন, ‘যে নাটক আমাদের গেলানোর চেষ্টা করা হয়েছে, তা যে বানোয়াট, তা আমাদের কাছে পরিষ্কার হয়েছে।’
ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ভারপ্রাপ্ত ডিন সাদেকা হালিম বলেন, ‘পরীমনিকে তিনবার রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে এবং মিডিয়া ট্রায়াল হচ্ছে। এটা কোনোভাবেই কাম্য নয়। পরীমনি চলচ্চিত্র জগতের একজন প্রতিষ্ঠিত মানুষ। তাঁর প্রতি যে ধরনের ব্যবহার করা হচ্ছে, তার যৌক্তিকতা এখনো আমাদের সামনে পরিষ্কার নয়।’
লেখক ও অ্যাকটিভিস্ট শাশ্বতী বিপ্লব বলেন, পরীমনির চরিত্রহনন নিয়ে মাতম ও আস্ফালন হাস্যকর। তার চেয়েও হাস্যকর যে একটি রাষ্ট্র এই হাস্যকর কাজে যুক্ত হয়েছে। পরীমনি মেরুদণ্ড সোজা করে দাঁড়িয়েছিলেন, সেটাই তাঁর দোষ। অন্যায়ের প্রতিবাদ করাটাই দোষ।
পরিচালক ও প্রযোজক হাবিবুল ইসলাম বলেন, পরীমনি গর্বের একজন অভিনেত্রী। তাঁকে যেভাবে উপস্থাপন করা হচ্ছে, তা কোনোভাবেই সংগত হয়নি।
সমাবেশে অন্যদের মধ্যে যুবনেতা খান আসাদুজ্জামান, কবি শতাব্দী ভব ও কাজী নুসরাত, ছাত্রনেতা গোলাম মোস্তফা ও সুমাইয়া সেতু, নির্মাতা রাশীদ পলাশ ও অপরাজিতা সঙ্গীতা প্রমুখ বক্তব্য দেন।