নকলায় এক কলেজ অধ্যক্ষের আপ্রাণ চেষ্টায় বদলে গেলো মেধাবী ছাত্রীর জীবন
রাইসুল ইসলাম রিফাত (নকলা প্রতিনিধি):
শেরপুরের নকলা উপজেলায় সরকারী হাজী জালমামুদ কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আলতাব আলীর সর্বাত্বক সহযোগীতায় বদলে গেলো মেধাবী শিক্ষার্থী মীমের জীবন কাহিনী।
উপজেলার নারায়নখোলা পূর্ব এলাকার নিখোজ মোঃ রফিকুল ইসলামের এক মাত্র মেধাবী মেয়ে মীম। ২০১৭ সালে এসএসসি পাশের পর ময়মনসিংহ মুসলিম গার্লস কলেজে ভর্তি হয়, পারিবারিক ও আর্থিক সমস্যার কারণে থেমে যায় পড়ালেখা। পরে ২০১৮ ইং সালে ভর্তি হয় নকলা সরকারী হাজী জালমামুদ কলেজে, সেখানেও শারিরিক অসুস্থতায় বেস্তে যায় আরো একটি বছর। করোনা কালীন অশান্তির পর ২০২১ সালে আসে রেজিঃ কার্ড। জেএসসি, এসএসএসি এবং জাতীয় পরিচয় পত্র অনুযায়ী শিক্ষার্থীর নামঃ মীম, পিতা-মোঃ রফিকুল ইসলাম, মাতা- মোছাঃ মমতাজ বেগম।
গত প্রায় এক মাস আগে উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড থেকে আসে এইচএসসির রেজিঃ কার্ড। রেজিঃ কার্ডে শিক্ষার্থীর নাম আসে মীম এর পরিবর্তে আঃ হাসিম, পিতার নামঃ রফিকুল ইসলামের পরিবর্তে মোঃ ইদ্রিস আলী, মাতার নাম আসে মমতাজ বেগমের পরিবর্তে মোছাঃ জামেনা খাতুন।
শুধু রোল নং এবং ছবি ছাড়া আর সব কিছু ভুল আসার পরে শিক্ষার্থী মীমের জীবনে নেমে আসে চরম হতাশা। এদিকে রেজিস্ট্রেশনের আর মাত্র ১ দিন বাকি। ৩১ আগষ্ট মেয়াদ শেষ। দৌড়াদৌড়ি শুরু হয় ২৯ তারিখ সন্ধা থেকে। মীমের পরিবার দৌড়ে যায় নকলা সরকারী হাজী জালমামুদ কলেজের অধ্যক্ষ আলতাব আলীর কাছে। হিমসিম খেয়ে যায় অধ্যক্ষ। সময় মাত্র আর ১ দিন বাকি। ২৯ আগষ্ট রাত ৮টা পর্যন্ত কাজ করেন অধ্যক্ষ আলতাব আলী। ২০১৭ ইং সাল থেকে সব কাগজ পত্র মিল করে পাঠান উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড ময়মনসিংহে। মীমের মা মীমকে সাথে নিয়ে পর দিন ৩০ আগষ্ট সকালে নকলা থেকে রওয়ানা দেন ময়মনসিংহ উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের উদ্দেশ্যে।
এদিকে ওই শিক্ষার্থী মীমের জন্য কয়েকজন প্রভাষক ও আইটি এক্সপার্ট নিয়ে টিম গঠন করেন অধ্যক্ষ আলতাব আলী। সারাদিন অকান্ত পরিশ্রম করে রাতের ৯টা পর্যন্ত একের পর এক তথ্য দিতে হয় বোর্ডে। অবশেষে ভুল তথ্য সংশোধন শেষে রাত প্রায় ১০ টার দিকে ফরম ফিলাপ হয় মেধাবী শিক্ষার্থী মীমের।
ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আলতাব আলীর সফল প্রচেষ্টায় হতাশ হওয়া শিক্ষার্থী মীমের পরিবারকে এনে দিলো সোনার হরিন নামক এইচএসসি পরীক্ষা দেওয়ার সফলতা। ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আলতাব আলীর ১ দিনের এই কঠোর পরিশ্রম, শিক্ষার্থী মীমের জীবন থেকে হারিয়ে যাওয়ার উপক্রম ২টি বছরের জন্য দিলো সফল নিশ্চয়তা।

0 coment rios: