স্টাফ রিপোর্টার:
শেরপুরের নকলা থানার অফিসিয়াল ফেসবুক আইডি পোস্ট এর মাধ্যমে হারিয়ে যাওয়া দুই শিশুর সন্ধান পেয়ে হাসি ফিরে পেয়েছে হারিয়ে যাওয়া শিশুর দুই অসহায় পরিবার।
জানা যায়, ১০ এপ্রিল বুধবার রমজানের শেষদিন তারাকান্দা উপজেলার গোপিনাথপুর গ্রামের বাসিন্দা ইয়াকুব মিয়ার (৪৮) ছেলে ইস্রাফিল হোসেন (৯) ও একই গ্রামের বাসিন্দা আজিজুল হক(৪৫)এর ছেলে হুসাইন মিয়া (৬) বেলা ১১ ঘটিকায় নিজ বাসা থেকে বের হয়ে ইস্রাফিল এর বাবা ইয়াকুব মিয়ার সাইকেল মেরামত এর দোকানে যায়। তারপর সেখান থেকে একটি বাইসাইকেল নিয়ে বের হয় ইস্রাফিল ও হুসাইন।
এরপর আর ফিরে আসেনি এই দুই শিশু। এতে আশপাশ এলাকায় অনেক খুঁজাখুজি, মাইকিং সহ নানা ভাবে সন্ধান এ নামে পুরো পরিবার। তারপরও পাওয়া যায়নি এই দুই শিশুকে।
এতে হতাশায় ভেঙে পড়ে দুই পরিবারের সকল সদস্য।
এদিকে সন্ধা ঘনিয়ে ঈদের চাঁদ দেখার আনন্দে মেতেছে সকল মুসলিম পরিবার। কিন্তু হতাশায় কান্নায় ভেঙে পড়ে এই দুই পরিবার।
এমতাবস্থায় রাত ১০ ঘটিকার দিকে নকলা থানার অফিসিয়াল ফেসবুক আইডি তে একটি পোস্ট নজর কাড়ে সেই পরিবারের এক আত্মীয়ের।
তারপর সেই পোস্ট দেখে হতাশা কেটে আনন্দে ভেসে যায় দুই পরিবারের সদস্যবৃন্দ।
সেই পোস্ট দেখে তারা নিশ্চিত হয়, তাদের হারিয়ে যাওয়া দুই শিশু নকলা থানা হেফাজতে রয়েছে।
তারপর তারা বাড়ি থেকে ৪০ কিলোমিটার পাড়ি দিয়ে দ্রুত চলে আসে নকলা থানায়।
এমতাবস্থায় লক্ষ্য করা যায়, ওসি কাদের মিয়া অত্যন্ত যত্ন সহকারে দুই শিশুকে হেফাজতে রেখেছিলো এবং পরিবারের লোকজন না আসা পর্যন্ত অপেক্ষা করতেছিলেন।
রাত ১২ ঘটিকার দিকে পরিবারের লোকজন এসে জিম্মানামায় সাক্ষর করে তাদের আদরের সন্তানদের গ্রহণ করে নেন।
এবিষয়ে নকলা থানার অফিসার ইনচার্জ আব্দুল কাদের মিয়া জানান, শ্রবণ প্রতিবন্ধী (বোবা) শিশু ইস্রাফিল ও হুসাইন কে অদ্য ০৮.০০ ঘটিকায় নকলা বাজারে একটি বাইসাইকেলসহ পাওয়া যায়।তারা ঠিকানা বলতে পারেনা। এমতাবস্থায় তাদের ছবিসহ তিনি ফেসবুকে পোস্ট করেন। পোস্ট করার ঘন্টা খানিক এর মাঝে তাদের পরিবারের সন্ধান পায়। তারপর তাদের পরিবারের লোকজন আসার পর এই দুই শিশুকে তাদের হাতে তুলে দেওয়া হয়।
এতে ওসি কাদের মিয়া আনন্দের সহিত জানায়, আজ পবিত্র ঈদ এর চাঁদ রাত, এমতাবস্থায় হারিয়ে যাওয়া এই দুই শিশুকে তাদের পরিবারের হাতে সফলভাবে তুলে দিতে পেরে আমি আনন্দিত।
এবিষয়ে বাক প্রতিবন্ধী শিশু ইস্রাফিল এর বাবা ইয়াকুব মিয়া বলেন, আমার পুলা রে হারাইয়া আমরা ঈদ এর আনন্দ ভুইলা গেছিলাম, হতাশায় ভেঙে পড়ছিলাম, কিন্তু ওসি স্যারের চেষ্টায় উনার দেওয়া ফেসবুক পোস্ট দেখে আমার পুলা হারানোর বেদনা ভুইলা স্বস্তি পাইলাম। আমার পুলাকে ফিইরা পাইয়া আমি আনন্দিত। ওসি স্যারের চেষ্টায় আমগরে ঈদের আনন্দডা ফিইরা পাইলাম। ওসি স্যার পোস্ট না দিলে হয়তো আরও খোঁজাখুজি করা লাগতো, ঈদ বইলা আমগর কিছু রয়তোনা।
এসময় ইস্রাফিল ও হুসাইন কে নিতে আসা পরিবারের সকল সদস্যবৃন্দ ওসি কাদের মিয়াকে ধন্যবাদ জানান।



0 coment rios: