Friday, April 26, 2024

শব্দ সচেতনতা দিবস উপলক্ষ্যে নকলা প্রেসক্লাবে সচেতনতামূলক সভা অনুষ্ঠিত

নকলা (শেরপুর) প্রতিনিধি:

শেরপুরের নকলায় আন্তর্জাতিক শব্দ সচেতনতা দিবস উপলক্ষ্যে ঐতিহ্যবাহী নকলা প্রেসক্লাব’র উদ্যোগে সচেতনতামূলক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। ‘আসুন শব্দদূষণ রোধে সকলে সচেষ্ট হই’- এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে নকলা প্রেসক্লাব পরিবারের আয়োজনে এ সচেতনতামূলক সভা অনুষ্ঠিত হয়।


এপ্রিল মাসের শেষ বুধবার সন্ধ্যা ৭টার সময় প্রেস ক্লাবের অফিস কক্ষে ক্লাবটির সভাপতি মো. মোশারফ হোসাইন-এঁর সভাপতিত্বে ও সাংগঠনিক সম্পাদক মো. নূর হোসেনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সভায় বক্তব্য রাখেন- প্রেস ক্লাবের সিনিয়র সদস্য মাহবুবর রহমান, সাধারণ সম্পাদক মোশাররফ হোসেন সরকার বাবু, সিনিয়র সহসভাপতি খন্দকার জসিম উদ্দিন মিন্টু, যুগ্মসাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন, ক্রীড়া ও সংস্কৃতি বিষয়ক সম্পাদক মুহাম্মদ ফারুকুজ্জামান ফারুক প্রমুখ।

শব্দদূষণ কি, শব্দদূষণের ক্ষতিকারক দিকসমূহ ও শব্দদূষণ রোধে করণীয় সম্পর্কে জনসাধারণকে সচেতন করা এবং সরকারের দায়িত্ব ও কর্তব্য তুলে ধরার পাশাপাশি একজন নাগিরিক হিসেবে ও একজন সংবাদকর্মী হিসেবে এবিষয়ে আমাদের কি কি দায়বদ্ধতা রয়েছে সে বিষয়ে বক্তারা আলোচনা করেন।

শব্দ দূষণ নিয়ন্ত্রণে বাংলাদেশ শব্দ দূষণ নিয়ন্ত্রণ বিধিমালা ২০০৬ নিয়েও আলোচনা করেন বক্তারা। তারা জানান, শব্দ দূষণ নিয়ন্ত্রণ বিধিমালা ২০০৬ অনুসারে, শব্দ দূষণ একটি দণ্ডনীয় অপরাধ। প্রথমবার অপরাধের জন্য অনধিক এক মাসের কারাদণ্ড বা অনধিক ৬ হাজার টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দনেন্ডর বিধান রয়েছে। আর পরবর্তী অপরাধের জন্য অনধিক ৬ মাস কারাদণ্ড বা অনধিক ১০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দন্ড হতে পারে। তাঁরা বলেন- এই দেশটি আমাদের, একে রক্ষা করার দায়িত্ব আমাদেরই। তাই আমাদের নিজেদের জনসাস্থ্যের স্বার্থে ও পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষার্থে সম্মিলিতভাবে আমাদের শব্দ দূষণ প্রতিরোধ করতে হবে। শব্দ দূষণ কারণে দুশ্চিন্তা, উগ্রতা, উচ্চ রক্তচাপ শ্রবণ শক্তিরাশ ঘুমের ব্যাঘাতসহ অন্যান্য ক্ষতিকর ও বিরূপ প্রতিক্রিয়া ঘটে। যা আমাদের মানব দেহের নীরব ঘাতক বলে পরিচিত।

প্রেস ক্লাবের সিনিয়র সদস্য মাহবুবর রহমান বলেন, আগামী প্রজন্ম যাতে শব্দ দূষণ ও পরিবেশ দূষণ ব্যাপারে আগে থেকেই আরো সোচ্চার হতে পারে, সেই জন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শব্দদূষণ ও পরিবেশ দূষণের মতো বিষয়গুলো নিয়ে সচেতনতামূলক বাস্তব ধারণা দিতে হবে। সম্ভব হলে পাঠ্যপুস্তকের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের ব্যাপকভাবে জ্ঞান দিতে হবে। যদিও আমরা শব্দ দূষণের প্রভাব সহজে বুঝতে পারিনা। পরিবেশের ভারসাম্য বজায় রাখতে আমরা ব্যর্থ হলে, আমাদের অবশ্যই পরিবেশের বিরূপ আচরণের সম্মুখীন হতে হবে। তাই নিজেদের স্বার্থে ও পরিবেশের স্বার্থে আমাদের এখনই সচেতন হতে হবে। স্ব স্ব অবস্থান থেকে শব্দ দূষণ ও পরিবেশের ভারসাম্য বজায় রাখার ক্ষেত্রে আমাদের কাজ করতে হবে।

প্রেস ক্লাবের সিনিয়র সহসভাপতি খন্দকার জসিম উদ্দিন মিন্টু এ দিবসের মূল উদ্দেশ্য উল্লেখ্য করে জানান, যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংস্থা সেন্টার ফর হেয়ারিং অ্যান্ড কমিউনিকেশন ১৯৯৬ খ্রিষ্টাব্দে থেকে উচ্চ শব্দ নিয়ে বৈশ্বিক প্রচারণা শুরু করে। ওই বছর থেকে এপ্রিল মাসের শেষ বুধবার দিবসটি পালিত হয়ে আসছে। সে অনুযায়ী এবার বিশ্বব্যাপি ২৪ এপ্রিল বুধবার হচ্ছে আন্তর্জাতিক শব্দ সচেতনতা দিবস পালিত হয়।

ঢাকার শব্দদূষণের মাত্রা নিয়ে বায়ুমণ্ডলীয় দূষণ অধ্যয়ন কেন্দ্র (ক্যাপস) এর করা এক গবেষণার তথ্যসূত্র উল্লেখ করে প্রেস ক্লাবের সভাপতি মো. মোশারফ হোসাইন জানান, ঢাকার সব এলাকাতেই শব্দদূষণ (নিয়ন্ত্রণ) বিধিমালা, ২০০৬ তে উল্লেখিত আদর্শমান অতিক্রম করেছে শব্দের মাত্রা। নগরের বিভিন্ন স্থানে সাধারণভাবে শব্দের গ্রহণযোগ্য মানমাত্রার থেকে প্রায় ১.৩ থেকে ২ গুণ বেশি শব্দ পাওয়া গেছে। য জনস্বাস্থ্যের জন্য হুমকি বলে মনে করা হচ্ছে। তাই শব্দদূষণ রোধে শব্দ সচেতনতার মাধ্যমে স্বাস্থ্য ঝুঁকি কমাতে সকলকে আন্তরিকতার সাথে দায়িত্ব পালনের আহ্বান জানান তিনি। তিনি বলেন, দেশ ও জাতির স্বার্থে জনস্বাস্থ্য ঝুঁকি কমাতে সাংবাদিক হিসেবে আমাদের পক্ষে সম্ভব না হলেও একজন নাগরিক হিসেবে শব্দদূষণ রোধে শব্দ সচেতনতা বৃদ্ধিতে নিজ নিজ অবস্থান থেকে ভূমিকা রাখা জরুরি।

বক্তারা আরো বলেন, শব্দ দূষণ প্রতিরোধ যদি আমরা এখনি না করতে পারি তাহলে ভবিষ্যতে এর ভয়াবহতা আমাদেরই ভোগ করতে হবে। শব্দ দূষণ এখন শব্দ সন্ত্রাসে পরিণত হয়েছে। তাই শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণে পরিবহন সেক্টরের শব্দ নিয়ন্ত্রণ, হাইড্রোলিক হর্ন পরিহার, নগর পরিকল্পনা-ট্রেনিং কোড এর ব্যবহার, শব্দহ্রাস কারী স্থাপত্য নকশা বাস্তবায়নের জন্য নির্দিষ্ট সংস্থার ব্যবস্থা নিতে হবে।

এসময় প্রেসক্লাবের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলে রাব্বী রাজন, দপ্তর সম্পাদক সেলিম রেজা, তথ্য-গবেষণা সম্পাদক আসাদুজ্জামান সৌরভ, অর্থবিষয়ক সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল-আমিন, সদস্য রেজাউল হাসান সাফিত, শীমানুর রহমান সুখন ও রাইসুল ইসলাম রিফাতসহ অনেকেই উপস্থিত ছিলেন।

শেয়ার করুন

Author:

নকলা ২৪ এ আপনাকে স্বাগত। নকলা উপজেলার সর্বশেষ আপডেট পেতে নকলা ২৪ এর সাথেই থাকুন। ধন্যবাদ।

0 coment rios: