স্টাফ রিপোর্টার:
নকলা উপজেলার ইতিহাসে একজন সাহসী, মানবিক এবং কর্মঠ প্রশাসক হিসেবে যিনি অল্প সময়েই সাধারণ মানুষের হৃদয়ে জায়গা করে নিয়েছেন, তিনি উপজেলা নির্বাহী অফিসার, উপজেলা প্রশাসক এবং পৌর প্রশাসক দীপ জন মিত্র। মাত্র সাড়ে আট মাস দায়িত্ব পালন করেই তিনি রেখে গেছেন এক অনন্য প্রশাসনিক দৃষ্টান্ত, যা নকলার উন্নয়ন ও শৃঙ্খলায় স্থায়ীভাবে প্রভাব ফেলেছে।
দীপ জন মিত্র দায়িত্ব গ্রহণের পরপরই নকলার প্রশাসনকে গতিশীল ও স্বচ্ছ করার উদ্যোগ নেন। তিনি মোবাইল কোর্ট পরিচালনার মাধ্যমে আইনশৃঙ্খলা রক্ষা করেন, দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নেন এবং রাজস্ব আদায়ে নতুন গতি আনেন। হোল্ডিং ট্যাক্স এবং বিদ্যুৎ বিলসহ নানান বকেয়া পরিশোধ করে উপজেলা পরিষদকে আর্থিক স্বচ্ছতায় ফিরিয়ে আনেন তিনি। শুধু প্রশাসনিক দক্ষতাই নয়, তিনি তার আন্তরিক আচরণ, হাস্যোজ্জ্বল উপস্থিতি এবং মানবিক নেতৃত্বের মাধ্যমে নকলাবাসীর মনে জায়গা করে নেন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি পৌর প্রশাসকের দায়িত্বও অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে পালন করেন। পৌরসভার নানাবিধ জটিলতা দূর করে, ইতিহাসের সর্বোচ্চ ট্যাক্স আদায় নিশ্চিত করে এবং শহর পরিচ্ছন্ন রাখায় তার ভূমিকা ছিলো প্রশংসনীয়। তার তত্ত্বাবধানে পৌরসভা যেন এক নতুন প্রাণ ফিরে পেয়েছিলো।
তার বিদায়ে শুধু সাধারণ মানুষই নয়, প্রায় সকল দপ্তরের প্রধানগণ তাকে বিদায়ী শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। সকলের মাঝে তার আন্তরিকতা, পেশাদারিত্ব এবং সহানুভূতিশীল মনোভাব গভীরভাবে ছুঁয়ে গেছে। তিনি ছিলেন এমন একজন কর্মকর্তা, যিনি শুধু ফাইলে সই করে দায়িত্ব শেষ করতেন না ; বরং মাঠে থেকে, মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে, বাস্তব সমস্যা সমাধানে অগ্রণী ভূমিকা রাখতেন। সাংবাদিক সমাজ এবং রাজনৈতিক বিভিন্ন দলের নেতাকর্মীদের সাথেও তিনি সৌহার্দ্যপূর্ণ ও সম্মানজনক সম্পর্ক বজায় রেখেছেন। মতভেদ নয়, সমন্বয়ের মাধ্যমে তিনি সকল পক্ষের আস্থা অর্জন করেছিলেন।
তার বিদায় যেন এক অস্পষ্ট শূন্যতা তৈরি করেছে, যা সহজে পূরণ হবার নয়। নকলা আজ এক সত্যিকারের অভিভাবককে হারালো ; যিনি শাসনের চেয়েও বেশি ভালোবাসায় বিশ্বাস করতেন। বদলির প্রজ্ঞাপন তার শারীরিক উপস্থিতি হয়তো সরিয়ে নিচ্ছে, কিন্তু তার কর্মের ছাপ, সততার উদাহরণ আর মানবিকতার সুবাস দীর্ঘদিন নকলার আকাশে বাতাসে বয়ে বেড়াবে।
0 coment rios: