Tuesday, December 14, 2021

বয়স প্রায় একশো ভিক্ষা করে এখনও, পাশে নেই কেও

 


রাইসুল ইসলাম রিফাতঃ 


শেরপুরের নকলার কায়দা  দক্ষিণ গ্রামের বাসিন্দা মোঃআঃ মোতালেব (জন্ম ১৯২৮)  বয়স ৯৩ চলমান, ৩ ছেলে ৩ মেয়ে থাকা সত্বেও বাবাকে দেখার সামর্থ্য নেই কোনও সন্তানেরই। 


বিছানা থেকে উঠে বসার সক্ষমতা না থাকা সত্বেও লাঠি হাতে থরথরে পা নিয়ে হেঁটে হেঁটে ভিক্ষা করেন ৯৩ বয়সী এই মোতালেব উরফে গুবাওরা। ভিক্ষা করে জীবিকা নির্বাহ করাতে হয় নিজেসহ তার সহধর্মিণীকে। 


শুধু তাই নয়, জানা গেছে এই মোতালেব  বিডিআর তথা বিজিবির সাবেক সদস্য। তবে সঠিক কাগজপত্রের সংরক্ষণ পাওয়া যায়নি। 



গত ১৩ ডিসেম্বর সোমবার নকলার হাসপাতাল মোড় সংলগ্ন টিএনটি অফিসের সামনে দেখা মেলে এই অসহায় ভিক্ষুকের। সাংবাদিক মোশাররফ হোসেন সরকার বাবুর সহযোগিতায় তার বাড়ির সন্ধান পাওয়ার পর ১৪ ডিসেম্বর  মঙ্গলবার সন্ধ্যায় তার নিজ বাড়িতে সরেজমিনে গিয়ে জানা যায় নানান বেদনাদায়ক তথ্য।



আঃ মোতালেব যৌবন বয়সে ছিলো প্রতাপশালী সম্ভ্রান্তের ন্যায় সাবলম্ভীন। ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ প্রত্যক্ষভাবে দেখার সুযোগ হয়েছিলো তার, পরোক্ষভাবে সহযোগিতা করলেও সরাসরি যুদ্ধে অংশগ্রহণ করার সুযোগ  হয়নি তার। যুদ্ধে অংশগ্রহণ করলে আজ হয়তো এই দেশের মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে স্বীকৃত পেতেন তিনি, দুর্ভোগ ভুগতে হত না তার৷ ভাগ্যের নির্মম পরিহাস তাকে ভুগাচ্ছে মৃত্যুশয্যায়। 


আঃমোতালেবের সাথে কথা হলে বলেন, আমার পোলাপানরা  ছয় মাস এক বছর পরে পরে আয়ে, কেও ঢাহা থাহে কেও দিনাজপুর,  ইডা উডা কর্ম কইরা খায়,অগরেই দিন চলে না আমারে দেখবো কোনবেলা, এল্লাইগা ভিক্ষা কইরা খাই। 


এ বিষয়ে এলাকাবাসীরা জানান, মোতালেব দীর্ঘদিন ধরে বিছানায় পরে আছেন, সাহায্য সহযোগিতা তেমনভাবে কেও করেনা। করলেও সেটা দিয়ে জীবিকা নির্বাহ করা যায়না, তাই  অসুস্থ শরীর নিয়ে হাত পাতেন মানুষের ধারে ধারে। যাই কিছু সারাদিনে পায় সেগুলা দিয়েই তারা স্বামী স্ত্রী জীবনধারণ করেন।


এই বৃদ্ধ ৯৩ বয়সী অসহায় মোতালেব সরকারের ও বিভিন্ন সামাজিক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন এর দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন  এবং অশ্রুঝরা চোখে সকলের কাছে আকুল আবেদন জানিয়েছেন যেনো শেষ বয়সটা হাত পেতে খেতে না হয়। একটু শান্তি নিয়ে বেঁচে থাকতে চান এই অসহায় বৃদ্ধ মোতালেব।


শেয়ার করুন

Author:

নকলা ২৪ এ আপনাকে স্বাগত। নকলা উপজেলার সর্বশেষ আপডেট পেতে নকলা ২৪ এর সাথেই থাকুন। ধন্যবাদ।

0 coment rios: