পূর্বশত্রুতার জেরে নোবেল বাহিনী কর্তৃক দ্বীন ইসলাম বাবু ও আশরাফুল ইসলাম নামের দুই কিশোরকে এলোপাথাড়ি ছুরিকাঘাত করে গুরুত্বর আহত করার ঘটনা ঘটেছে শেরপুর জেলার নকলা উপজেলার চন্দ্রকোনা ইউনিয়নে। আহত ওই দুই কিশোর এখন ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে। বুধবার(২৫ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় এই ঘটনা ঘটে।
ঘটনাটি ঘটেছে শেরপুর জেলার নকলা উপজেলার
চন্দ্রকোনা ইউনিয়নের বাছুর আলগা উত্তরপাড়া মাইঝপাতি গ্রামে।
এ বিষয়ে জাহাঙ্গীর হোসেন জীবন বাদী হয়ে মৃত জিন্নাত আলীর ছেলে নোবেল মিয়াকে প্রধান আসামী করে ৫ জনকে স্বনামে এবং ২/৩ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামী করে নকলা থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন।
আহতের পারিবার ও থানায় দায়ের করা অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, ভিকটিমের চাচা মো. মনির মিয়া উত্তর বাছুর আগলা গ্রামের জাহাঙ্গীর হোসেন জীবনের কৃষি প্রজেক্টে কাজ করেন। অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ জীবনের সাথে নোবেলের পূর্ব সূত্রতা থাকায় মনির মিয়াকে সেখানে কাজ করতে নিষেধ করেন। কিন্তু মনির মিয়া তার নিষেধ অমান্য করিয়া কাজ করিতে থাকিলে তার উপর ক্ষেপে গিয়ে নোবেল সহ অন্যান্যরা সমবেত হয়ে পূর্ব পরিকল্পিত ভাবে এলোপাথাড়ি ছুরিকাঘাত করে মারাক্তক ভাবে আহত করে। আহতদের ডাক চিৎকারে স্থানীয়রা তাদেরকে দ্রুত উদ্ধার করে নকলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রেরণ করেন। পরে তাদের অবস্থার অবনতি হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক আহতদের উন্নত চিকিৎসার জন্যে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করেন।
এই বিষয়ে অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ জাহাঙ্গীর হোসেন জীবন জানান, নোবেল বাহিনী পূর্ব থেকেই নানা অপকর্মে লিপ্ত। তার ও তার বাহিনীর নামে ইতিপুর্বে অনেক মামলা হলেও অদৃশ্য ক্ষমতা বলে বারংবার তারা পুলিশের কাছে থাকছে অধরা। তাদের অত্যাচার পুরো গ্রামবাসী অতিষ্ঠ। এই নোবেল বাহিনীর হাত থেকে রক্ষা চায় এলাকাবাসী।
আহত কিশোর খাইরুল ইসলামের বাবা জানান, আমার ছেলে দ্বীন ইসলাম ও ভাতিজা আশরাফুল ছোট মানুষ। তারা চন্দ্রকোনা রাজলক্ষী উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণীতে পড়াশুনা করে। তারা আমার ভাইয়ের খামারে খাবার দিয়ে বাড়ি ফেরার পথে নোবেল বাহিনী তাদের উপর অতর্কিত হামলা করে। আমার ছেলের অবস্থা খুব খারাপ, ছুরিকাঘাতে পেটের ভুরি বাহির হয়ে গেছে এবং ভাতিজার একই অবস্থা, এখন বাঁচবে কিনা আল্লাহ জানে। তিনি আরো জানান, এই নোবেল বাহিনী এর আগেও এলাকার এক ছেলেকে মেরে ফেলার চেষ্টা করেছিলো ও তার মরহুম বাবা একজন মার্ডার কেসের আসামি ছিল। পরবর্তীতে স্থানীয় চেয়ারম্যান ও এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিরা গ্রাম শালিসের মাধ্যমে মিটমাট করে দেয়। বেশ কিছুদিন শান্ত থাকার পর এই নোবেল বাহিনী আবারো বেপরোয়া হয়ে উঠেছে।
এছাড়াও তাদের অত্যাচারে স্থানীয় লোকজন ঠিকমতো কৃষি চাষ করতে না পারা, জমি থেকে মটর চুরি,ধান চুরি, কৃষি জমি বিনষ্ট করার মতো গুরুতর অভিযোগ রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে।
এবিষয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এলাকাবসী জানান, কুখ্যাত নোবেল বাহিনীর হাত থেকে রক্ষা না পেলে তাদের এলাকায় অশান্তি বিরাজ অব্যহত থাকবে। নোবেল বাহিনীর হাত থেকে মুক্তি চান পুরো এলাকাবাসী।
এই সকল বিষয়ে স্থানীয় ইউনিয়ন চেয়ারম্যান মো. কামরুজ্জামান গেন্দু’র সাথে একাধিকবার যোগাযোগ করেও তার কোন বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে নকলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাবিবুর রহমান বলেন, পাঁচ জনকে আসামি করে নকলা থানার একটি ধারাবাহিক মামলা হয়েছে। অপরাধীদের দ্রুত গ্রেফতারে পুলিশি অভিযান চলমান রয়েছে বলেও অভিহিত করেন।
0 coment rios: