নকলা (শেরপুর) প্রতিনিধি:
অভাবের সংসার। তাতে কি, জীবন তো আর থেমে থাকে না। জীবিকার তাগিদে কোমল হাতে শেরপুরের নকলায় পৌর শহরের কাঁচা বাজার এলাকায় খোলা আকাশের নিচে কিছু শাক-সবজি নিয়ে বসে আছে ৮ বছরের শিশু সাবীব, তার পাশেই বসে আছে সহোদর ভাই ৩ বছরের সাজিদ নামের আরো এক শিশু। তারা স্থানীয় শাক-সবজি ব্যবসায়ী শাখাওয়াত হোসেন ফারুক-এর সন্তান।
সোমবার (২১ জুলাই) দুপুরে সবজির দোকানটিতে প্রাপ্ত বয়স্ক কেউ না থাকায় স্বাভাবিক কারণেই ক্রেতারা তাদের দোকানে কেটাকাটার জন্য যাচ্ছেন না। শিশু দুইটি কেন সবজির দোকানে? সেদিকেও যেন কারো খেয়ালও নেই।
সাবীব জানায়, তাদের সংসারে মা, বাবা ও দুই ভাই আছেন। পরিবারের আয়ের একমাত্র মাধ্যম শাক-সবজি বিক্রির ছোট্ট এই দোকান। দোকানটি পরিচালনা করেন তার বাবা শাখাওয়াত হোসেন ফারুক নিজে। সংসারের সব খরচ এই দোকান থেকেই জোগাড় করতে হয়। তাই আম্মা আমাদেরকে দোকানে পাঠাইছেন। কিছু বেচলে তা দিয়ে বাজার করবো; এছাড়া দোকানের শাক-সবজি না বেচলে সেগুলো নষ্ট হয়ে যাবে।
জানা যায়, গত বছরের ১২ ডিসেম্বর তারিখে ১৯৭৪ ধারায় বিশেষ ক্ষমতা আইন ১৫(৩) মোতাবেক নকলা থানায় একটি মামলা করা হয়; যার নং ৬। ওই মামলায় অঙ্গাত অযুহাতে সন্দেহজনক হিসেবে শনিবার রাত সাড়ে এগারোটার দিকে দোকান বন্ধ করার সময় ফারুককে থানার পুলিশ থানায় ডেকে নিয়ে প্রথমে গ্রেফতার দেখিয়ে রোববার দুপুরের দিকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে প্রেরণ করা হয়।
সহজ সরল নিরীহ প্রকৃতির লোক সবজি ব্যবসায়ী শাখাওয়াত হোসেন ফারুককে গ্রেফতার পূর্বক কারাগারে প্রেরণের পরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিন্দা, প্রতিবাদসহ দ্রুত স্বসম্মানে কারামুক্তির দাবি জানিয়েছেন অনেকে। প্রশাসন ও পুলিশ বিভাগের এহেন কর্মকাণ্ড নিয়েও নানান প্রশ্ন তুলেছেন সচেতন মহল।
অনেকে বলেন, ‘অপরাধীকে তার প্রাপ্যতা অনুযায়ী খোঁজে বের করে প্রয়োজনে জনসম্মুখে শাস্তি দিলেও কেউ বিরক্ত হবেন না। কিন্তু নিরপরাধ নিরীহ জনগণকে হয়রানি করলে আল্লাহ তথা মাফ করবে না। প্রকৃতি সব কিছুর পাই পাই করে হিসেবে করে প্রাপ্যতা অনুযায়ী ফলাফল বুঝিয়ে দেয়।’
তাই শান্তি প্রিয় সাধারণ জনগণের উপর জুলুম অত্যাচার হয়রানি করা থেকে প্রশাসন ও পুলিশ বিভাগের প্রতি অনুরোধ এবং রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের সুদৃষ্টি কামনা করছেন সব পেশা শ্রেণীর জনগণ।
0 coment rios: