রাইসুল ইসলাম রিফাত:
শেরপুরের নকলায় ফুটপাতের টোকাই আবুল কালাম ছিলেন শহরের সেরা ব্যবসায়ী৷ গত ২৪ ডিসেম্বর নকলা প্রেসক্লাব এর সাধারণ সম্পাদক মোশাররফ হোসেন সরকার বাবুর প্রতিবেদনে জাতীয় দৈনিক কালের কন্ঠ পত্রিকায় প্রকাশ হয়েছিলো "শহরের সেরা ব্যবসায়ী আজ ফুটপাতের টোকাই" এই শিরোনামে। যা দৃষ্টিগোচর হয়েছিলো প্রায় অর্ধ কোটি মানুষের। খবরটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করে নিজ টাইমলাইন এ রেখেছে ১ লক্ষ ৪৮ হাজার মানুষ৷ কেও কেও জানিয়েছেন সমবেদনা কেওবা অনুশোচনা। তবে সবাই দুঃখ প্রকাশ করলেও নগদ সহযোগিতার হাত বাড়ায় নি কেওই।
তবে শেরপুর জেলা প্রশাসক মোমিনুর রশীদ শতভাগ আশ্বাস দিয়েছে একটি বাসস্থান নিশ্চিতে। যর নির্মাণের কাজ চলমান। কিন্তুু এতে থেমে নেই টোকাই আবুল কালাম। তার জীবীকা নির্বাহের জন্য এখনো ফুটপাতে দেখা মেলে তার।
বিষয়টি গত ৫ই জানুয়ারি নকলা অদম্য মেধাবী সহায়তা সংস্থার নির্বাহী পরিচালক অস্ট্রেলিয়ান প্রবাসী আবু শরীফ কামরুজ্জামান এর দৃষ্টিগোচর হওয়ার পরপরই তিনি এই টোকাই কে ভ্রাম্যমান চা বা শীতকালীন পিঠা বানিয়ে তথা ক্ষুদে ব্যবসা করে আত্নকর্মসংস্থান এর জন্য নগদ ১৫ হাজার টাকা পাঠান।
যা নকলা অদম্য মেধাবী সহায়তা সংস্থার উৎসাহ প্রদানকারী ও উপজেলা আওয়ামী যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক এফ এম কামরুল আলম রনজু, নকলা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মোশারফ হোসেন সরকার বাবু, সহ-সভাপতি খন্দকার জসিম উদ্দিন মিন্টু,যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক নূর হোসেন, অর্থ বিষয়ক সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল আমিন, সদস্য রাইসুল ইসলাম রিফাত,নকলা অদম্য মেধাবী সংস্থার সহকারী পরিচালক আতিকুর রহমান আতিক, সভাপতি শফিকুল ইসলাম শফিক, সাধারণ সম্পাদক মোঃ নাসির উদ্দিন, মোশাররফ হোসেন শ্যামল ও হাসান মিয়ার উপস্থিতিতে আবুল কালামের হাতে তুলে দেওয়া হয়।
এতে আবুল কালাম বলেন, আমি নকলা অদম্য মেধাবী সহায়তা সংস্থার প্রতি কৃতজ্ঞ, আমি আর ফুটপাতে কোনও কিছু তে হাত দিমুনা, আমি ভাপা, চিতই পিঠা বেইচা খামু।
অপরদিকে, রাইসুল ইসলাম রিফাতের প্রতিবেদনে আরেকটি খবর প্রকাশ হয়েছিলো জাতীয় দৈনিক আজকের বাংলাদেশ পত্রিকায়, যার শিরোনাম ছিলো 'বয়স প্রায় একশো ভিক্ষা করে এখনও, পাশে নেই কেও'এই শিরোনামে। সেই খবরটিও অনেকের দৃষ্টি আকর্ষণ হলেও সহযোগিতার হাত বাড়ায়নি কেওই। তবে খোঁজ খবর ও সাধ্যমত সহযোগীতার জন্য আশ্বাস দিয়েছিলো দরিদ্র তহবিল সংস্থার হাসান মিয়া। অন্যদিকে উপজেলা সমাজসেবা অফিসার আলমগীর হোসেন বলেছিলো, তিনি বয়স্ক ভাতা না পেলে বয়স্ক ভাতা দেওয়া হবে। পরে জানা যায়, উনার বয়স্ক ভাতা আছে তবে তা দিয়ে জীবীকা নির্বাহ সম্ভব নয়।
এমতাবস্থায় নকলা অদম্য মেধাবী সহায়তা সংস্থার নির্বাহী পরিচালক আবু শরীফ কামরুজ্জামান এর দৃষ্টিগোচর হলে তিনি আগামী ২ মাসের ভরণ পোষণ এর দায়িত্ব নিয়ে উক্ত সংগঠনের সদস্যদের বাজার করে নিয়ে যাওয়ার জন্য ৫ হাজার টাকা পাঠান। যা দিয়ে ২ মাসের তরিতরকারি, ফলমূল, ঘরের কিছু সরঞ্জাম এবং নগদ অর্থ দিয়ে সেই ভিক্ষুক এর বাড়ি পৌঁছে দেওয়া হয়।
এতে ভিক্ষুক আবু মোতালেব আবেগে আপ্লূত হয়ে কান্নায় ভেঙ্গে বলেন, আপনারা অনেক উপকার করলেন,আল্লাহ তায়ালা আপনাদের সকলকে হায়াত নসিব দান করুক।
উপরুক্ত দুই অসহায়কে সহযোগিতা করতে পেরে আনন্দ প্রকাশ করেছেন অস্ট্রেলিয়ান প্রবাসী আবু শরীফ কামরুজ্জামান।
0 coment rios: